
নির্বাচনের সুর বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার সেই সুরে গতি আনলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে অমিত শাহ ঘোষণা করেন — “দিদি, আপনার সময় শেষ। ২০২৬-এ বাংলায় বিজেপির সরকার গড়ব, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেবেন।”
তিনি বলেন, “অনেক বছর বাংলায় রাজত্ব করেছে বামেরা। তারপর ‘মা-মাটি-মানুষ’-এর স্লোগান তুলে ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখন সেই বাংলা পরিণত হয়েছে অনুপ্রবেশ, দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, বোমা বিস্ফোরণ আর হিন্দুদের উপর অত্যাচারের গঠিত কেন্দ্রে।”
নির্বাচনী হিংসার প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহের অভিযোগ, “সারা দেশে যেখানে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়, সেখানে বাংলায় বিজেপি কর্মীদের একের পর এক খুন করা হচ্ছে। এই দিদির রাজত্বে গণতন্ত্রের কোন স্থান নেই।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে সাফ ভাষায় শাহের বার্তা —
“দিদি, কতদিন বাঁচাবেন ওদের? আমার কথা শুনুন — আপনার সময় শেষ। ২০২৬-এ বাংলায় গঠন হবে বিজেপি সরকার। কথা দিচ্ছি, তৃণমূল সরকারের পতনের পর যারা আমাদের কর্মীদের হত্যা করেছে, তাদের পাতাল থেকেও বের করে শাস্তি দেওয়া হবে। গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই।”
তিনি আরও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, “ক্ষমতা থাকলে হিংসা ছাড়া, রিগিং ছাড়া একবার নির্বাচন করিয়ে দেখান। আপনার নিজের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এবার তুষ্টিকরণ রাজনীতির অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার কলকাতায় এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন,
“মমতাদির সহানুভূতি পাকিস্তানি জঙ্গিদের জন্য, বাংলার শহিদ পর্যটকদের জন্য নয়। পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তানি জঙ্গিরা নির্দোষ পর্যটকদের ধর্ম জিজ্ঞেস করে খুন করেছে — ওদের সাজা হওয়া উচিত কি না, বলুন বাংলার মানুষ?”
এরপরই শাহের সাফ বক্তব্য,
“আমরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছি, এয়ার স্ট্রাইক করেছি, এবার মোদিজি ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালালেন। পাকিস্তানের ভেতরে ১০০ কিমি ঢুকে জঙ্গিদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, শত শত জঙ্গিকে নিধন করা হয়েছে। কিন্তু এতে মমতাদির পেটে ব্যথা হচ্ছে! যখন বাংলার পর্যটকরা প্রাণ হারিয়েছিলেন, তখন কোনো দুঃখ ছিল না! এখন নোংরা রাজনীতি করছেন।”
শাহের অভিযোগ, মোদিজি অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বক্তব্য রাখতেই, মমতা তা নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণের রাস্তা নেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, মোদি নাকি সিঁদুর বিক্রি করতে নেমেছেন, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত দাম্পত্য জীবন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
এর উত্তরে শাহ বলেন,
“মমতাদিদি, আপনি অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা করেননি — আপনি দেশের কোটি কোটি মা-বোনের আবেগ নিয়ে খেলা করেছেন। বাংলার মাতৃশক্তিকে আমি বলব, দিদিকে সিঁদুরের মূল্য বুঝিয়ে দিন। সিঁদুর শুধু একটুকরো প্রসাধন নয়, এটা আত্মত্যাগ, আত্মসম্মান আর রক্তমিশ্রিত গর্বের প্রতীক। যার অপমান করলে, তার জবাব বাংলার মা-বোনেরাই দেবেন।”